Game: এক কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি সানরাইজার্স হায়দরাবাদ – নতুন মৌসুমে পুরোনো রূপ নেই
Game: ২০২৪ আইপিএলে দারুণ সাফল্যের পর সানরাইজার্স হায়দরাবাদ (এসআরএইচ) ২০২৫ সালের আসরে যেন সম্পূর্ণ ভিন্ন এক বাস্তবতার মুখোমুখি। গত মৌসুমে যেখানে তারা মাত্র এক কদম দূরে ছিল শিরোপার স্বাদ থেকে, চলতি বছরে তারা যেন ছন্দ হারিয়ে ফেলেছে। সর্বশেষ ৬ এপ্রিল গুজরাট টাইটান্সের বিপক্ষে সাত উইকেটে পরাজয়ের ফলে এটি ছিল তাদের টানা চতুর্থ হার। এ পরিস্থিতিতে দলটির ডাগআউটে একধরনের হতাশা স্পষ্টভাবে ধরা পড়ছে।
ম্যাচ-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে প্রধান কোচ ড্যানিয়েল ভেটোরি ছিলেন কিছুটা ম্লান, তবে আশা হারাননি। তিনি বলেন, “অবশ্যই এটা হতাশাজনক। Game: দলটির প্রত্যাশা অনেক উঁচুতে, কিন্তু আমরা এখনও সেরাটা দিতে পারিনি। শেষ চার ম্যাচে আমরা কোথাও প্রতিদ্বন্দ্বিতাই করতে পারিনি, তবে এখনই হাল ছেড়ে দেওয়ার সময় নয়। প্রতিটি আইপিএল দলই একটা সময় খারাপ পর্যায়ের মধ্য দিয়ে যায়। আমাদের সামনে পাঁচ দিনের বিরতি, এরপর প্রতিপক্ষ পাঞ্জাব, যারা এবারের আসরে দুর্দান্ত খেলছে। সেই ম্যাচটার জন্য আমাদের মানসিকভাবে প্রস্তুত হতে হবে।”
গত বছরের মৌসুমে এসআরএইচ ব্যাটিংয়ে প্রতিপক্ষকে দমিয়ে রাখার এক নতুন মডেল দাঁড় করিয়েছিল। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের সেই ধারা দেখে মনে হয়েছিল যেন ২৫০ রানও তাদের কাছে মামুলি ব্যাপার। বেঙ্গালুরুর বিপক্ষে ২৮৭ রানের বিশ্বরেকর্ড গড়ে তার প্রমাণ মিলেছিল। চলতি আসরের প্রথম ম্যাচেও তারা ২৮৬ রান করে সেই ধারার ইঙ্গিত দিয়েছিল। ইশান কিশানকে অন্তর্ভুক্ত করে তারা ব্যাটিং লাইনআপকে আরও ভয়ঙ্কর করেছিল। টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচেই কিশান সেঞ্চুরি করে যেন সেই প্রত্যাশাকে উসকে দেন।
Table of Contents
Game: SRH’s aggression backfires – কোথায় হলো ভুল?

কিন্তু এরপর থেকে কিশানসহ পুরো ব্যাটিং ইউনিটের আগ্রাসন যেন ব্যুমেরাং হয়ে দাঁড়িয়েছে। টি-টোয়েন্টিতে আক্রমণাত্মক মেজাজ জরুরি হলেও পিচ ও প্রতিপক্ষ বোলিং অনুযায়ী মানিয়ে নেওয়ার কৌশল না থাকলে তা বিপদই ডেকে আনে। গুজরাটের বিপক্ষে ম্যাচে যদিও এসআরএইচ মূল বিষয়গুলোতে বড় কোনো ভুল করেনি বলে মনে করেন ভেটোরি। “আমরা জানতাম উইকেট ধীরগতির হবে, ১৬০-১৭০ ভালো স্কোর। ছেলেরা চেষ্টা করেছে ইনিংস গড়তে, পার্টনারশিপ গড়তে। শেষ দিকে আমরা ২০ রান কম করে ফেলেছি, তবে পরিকল্পনার দিক থেকে ছেলেদের বোঝাপড়াটা ঠিকই ছিল।”
ম্যাচে এসআরএইচ ব্যাটিং বিপর্যয়ের অন্যতম কারিগর ছিলেন তাদেরই সাবেক ক্রিকেটার, হায়দরাবাদের ঘরের ছেলে মোহাম্মদ সিরাজ। নতুন বলে দুই ওপেনারকে তুলে নিয়ে গতি এনে দেন গুজরাটের বোলিং আক্রমণে। পরে ডেথ ওভারে এসআরএইচের শেষ ভরসা আনিকেত ভার্মাকেও তুলে নেন তিনি। ভেটোরি সিরাজের বোলিংয়ের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, “সে অসাধারণ বোলিং করেছে। পরিস্থিতি বুঝে লেংথ ঠিক রেখেছে, স্টাম্প টার্গেট করেছে। ৪ উইকেট নিয়ে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে।”
এসআরএইচ এখন পর্যন্ত পাঁচ ম্যাচে চারটি হারলেও, ভেটোরি এটিকে একেবারে বিপর্যয় হিসেবে দেখছেন না। তবে আত্মবিশ্লেষণের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলেই মনে করেন। ২০২৪ সালের আসরে তারা কখনো টানা তিনটির বেশি ম্যাচ হারেনি। গতবার দেশের বিভিন্ন মাঠ ব্যাটিং সহায়ক থাকলেও এবার পরিস্থিতি কিছুটা ভিন্ন। হায়দরাবাদে খেলা হওয়া উইকেটগুলোতেও আগের মতো রান উঠছে না।
“গত মৌসুমের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখতে গেলে আমরা অনেক দূরে সরে এসেছি,” বলেন ভেটোরি। “প্যাট কামিন্স কখনোই তাড়াহুড়ো করেন না, আমিও না। তবে আমরা জানি চার ম্যাচে হার মানে কী। সবচেয়ে হতাশাজনক ব্যাপার হলো – আমরা তিনটি বিভাগেই খারাপ খেলছি – ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং। আমাদের ফিল্ডিং দেখে বোঝা যায় দলের অবস্থা কেমন, এবং এই জায়গাটা সত্যিই দুর্বল হয়ে পড়েছে।” Game
এসআরএইচের দুর্দান্ত শুরু যেমন ছিল ব্যাট হাতে, তেমনি এখন তাদের রান ১৭৫-১৮০ ছুঁতে পারছে না। প্রথম দুটো ম্যাচে তারা যথাক্রমে ২৮৬ এবং ১৯০ রান তুললেও পরবর্তী তিন ম্যাচে ব্যাটিং একেবারে মুখ থুবড়ে পড়েছে। এর ফলে প্যাট কামিন্সের নেতৃত্বে বোলিং ইউনিটও ব্যাকফুটে চলে গেছে। স্কোরবোর্ডে বড় রান না থাকলে রক্ষণাত্মক বোলারদের পক্ষে ম্যাচ ধরে রাখা কঠিন।
Game: ভেটোরির মতে, “আমরা কোনো ম্যাচেই তিনটি বিভাগেই ভালো খেলতে পারিনি। গত বছর আমরা বড় রান করতাম এবং সেটাকে আঁকড়ে ধরে জয় ছিনিয়ে আনতাম। এবার সেটা হচ্ছে না। তবে আইপিএলের সৌন্দর্যই হলো – বারবার সুযোগ আসে। আমাদের ব্যাটিং ইউনিটে প্রতিভা আছে, এখন দরকার দল হিসেবে একসাথে পারফর্ম করা।”
বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, এই বছর মাঠের চরিত্র কিছুটা বদলে গেছে। Game: আগের মতো পাওয়ারহিটিং সহজ হচ্ছে না। এসআরএইচের টপ-অর্ডার ট্রাভিস হেড, অভিষেক শর্মা এবং ইশান কিশানের মধ্যে একজনও ধারাবাহিকতা দেখাতে পারেননি। যদিও গুজরাটের বিপক্ষে কিশান কিছুটা ছন্দে ছিলেন, তবু ইনিংস বড় করতে পারেননি।
শেষ পর্যন্ত ভেটোরির বার্তা স্পষ্ট – মাঠের অবস্থা, প্রতিপক্ষের পরিকল্পনা, ও নিজেদের সক্ষমতা – এই তিনটি বিষয়কেই সমানভাবে গুরুত্ব দিতে হবে। “আমরা জানি কী ধরনের ক্রিকেট খেলতে চাই, কিন্তু এখন প্রয়োজন কন্ডিশন বুঝে খেলা। প্রতিপক্ষ বোলাররা আমাদের টপ অর্ডার নিয়ে পরিকল্পনা করছে এবং সফলও হচ্ছে। আমাদের সেই চাপ কাটিয়ে উঠতে হবে।”