টেস্ট ক্রিকেটে অনেক সময় ব্যাটসম্যানরা এক দিন এবং অর্ধেক খেলার পর ১৫০ থেকে ২০০ রান করেন। তবে কিছু খেলোয়াড় এর চেয়েও বেশি রান করে অসাধারণ রেকর্ড তৈরি করেছেন। এই নিবন্ধে আমরা শীর্ষ ১০ জন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটারের সবচেয়ে চিত্তাকর্ষক ব্যক্তিগত টেস্ট স্কোর সম্পর্কে আলোচনা করব।
10. ডেভিড ওয়ার্নার (অস্ট্রেলিয়া)- ৩৩৫ রান
ডেভিড ওয়ার্নার ২০১৯ সালের ২৯ নভেম্বর অ্যাডিলেডে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৩৩৫* রান করে ১০ম সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত টেস্ট স্কোর অর্জন করেন। আগে কিছু সমস্যার সম্মুখীন হওয়ার পরও তিনি ৪১৮ বলের ইনিংসে ৩৯টি চারের সঙ্গে ১টি ছক্কা মারেন। অস্ট্রেলিয়া ৫৮৯ রানে ৩ উইকেটে ইনিংস ঘোষণা করে এবং ৪৮ রানে জয় পায়।
9. ওয়ালি হ্যামন্ড (ইংল্যান্ড)- ৩৩৬ রান
ওয়ালি হ্যামন্ড সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত টেস্ট স্কোরের মধ্যে নবম স্থানে আছেন। ৩১ মার্চ, ১৯৩৩ তারিখে প্রাক্তন ইংরেজ ক্রিকেটার নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে অকল্যান্ডে ৩৩৬ রান অপরাজিত করেন। তিনি ৩৪টি চার এবং ১০টি ছক্কা মেরেছিলেন, যা ইংল্যান্ডের ১৫৮ রানের বিপরীতে ৫৪৮ রান সংগ্রহে সহায়তা করে। এই ম্যাচটি ড্রতে শেষ হয়।
8. হানিফ মোহাম্মদ (পাকিস্তান)- ৩৩৭ রান
হানিফ মোহাম্মদ, পাকিস্তানের প্রথম ক্রিকেট তারকা, পরবর্তী খেলোয়াড়। ১৭ জানুয়ারি, ১৯৫৮ সালে ব্রিজটাউনে, তিনি পশ্চিম ইন্ডিজের বিরুদ্ধে অসাধারণ একটি পারফরম্যান্স দেখান। পাকিস্তানকে ফলো অন করতে বাধ্য করার পরও, হানিফ ২৪টি বাউন্ডারি নিয়ে ৩৩৭ রান করেন, যা পাকিস্তানকে ৮ উইকেটে ৬৫৭ রানে পৌঁছে দেয় এবং ম্যাচটি ড্র হয়।
7. সনাথ জয়াসুরিয়া (শ্রীলঙ্কা)- ৩৪০ রান
সনাথ জয়াসুরিয়ার অসাধারণ ৩৪০ রানের ইনিংসটি ১৯৯৭ সালের ২ আগস্ট কলম্বোতে ভারতের বিরুদ্ধে উল্লেখযোগ্য। এই পারফরম্যান্সের মাধ্যমে শ্রীলঙ্কা ৫৩৭ রানের জবাবে তাদের সর্বোচ্চ টেস্ট স্কোর ৯৫২ রান করে। ৫৭৮ বল থেকে ৩৬টি চার এবং ২টি ছক্কা মারার পর, জয়াসুরিয়া শীর্ষ রান সংগ্রাহক হন। ম্যাচটি ড্রতে শেষ হয়, কারণ দ্বিতীয় ইনিংস হয়নি।
6. লিওনার্ড হাটন (ইংল্যান্ড)- ৩৬৪ রান
লিওনার্ড হাটন ১৯৩৮ সালের ২০ আগস্ট অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে দ্য ওভালে ৩৬৪ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলার জন্য পরিচিত, যা তাকে সর্বকালের তালিকায় ষষ্ঠ স্থানে রাখে। তিনি ৮৪৭ বল মোকাবেলা করে ৩৫টি বাউন্ডারি মারেন, যা ইংল্যান্ডকে ৯০৩ রানে ৭ উইকেটে পৌঁছাতে সহায়তা করে, যা টেস্ট ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্কোর। ইংল্যান্ড ইনিংসে ৫৭৯ রানে জয়ী হয় এবং দ্বিতীয় ইনিংস খেলার প্রয়োজন পড়ে না।
5. গ্যারি সোবার্স (ওয়েস্ট ইন্ডিজ)- ৩৬৫ রান
গ্যারী সোবার্স ১৯৫৮ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি কিংস্টনে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ৩৬৫ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলার জন্য পঞ্চম স্থানে আছেন। পাকিস্তানের ৩২৮ রানের জবাবে, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৭৯০ রানে ৩ উইকেটে পৌঁছায়, যেখানে সোবার্স ৩৮টি বাউন্ডারি মারেন এবং কনরাড হান্টে ডাবল সেঞ্চুরি করেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ইনিংসে ১৭৪ রানে জয়ী হয়।
4. মাহেলা জয়াবর্ধনে (শ্রীলঙ্কা)- ৩৭৪ রান
মাহেলা জয়াবর্ধনের অসাধারণ ৩৭৪ রানের ইনিংসটি ২০০৬ সালের ২৭ জুলাই কলম্বোতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে খেলা, যা তাকে চতুর্থ স্থানে নিয়ে আসে। দক্ষিণ আফ্রিকাকে ১৬৯ রানে অলআউট করার পর, শ্রীলঙ্কা ৫ উইকেটে ৭৫৬ রান করে, যেখানে জয়াবর্ধন ৫৭২ বল থেকে ৪৩টি চার এবং ১টি ছক্কা মারেন, এবং কুমার সাঙ্গাকারের ডাবল সেঞ্চুরিও ছিল। ম্যাচটি শ্রীলঙ্কার ইনিংসে ১৫৩ রানে জয়ে শেষ হয়।
3. ব্রায়ান লারা (ওয়েস্ট ইন্ডিজ)- ৩৭৫ রান
ব্রায়ান লারার ১৯৯৪ সালের ১৬ এপ্রিল সেন্ট জনসে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৩৭৫ রানের অসাধারণ ইনিংস তাকে রেকর্ড বইয়ে তৃতীয় স্থানে রাখে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৫ উইকেটে ৫৯৩ রানে ইনিংস ঘোষণা করে, যেখানে লারার পারফরম্যান্সে ৫৩৮ বল থেকে ৪৫টি বাউন্ডারি ছিল। ম্যাচটি শেষ পর্যন্ত ড্রতে শেষ হয়।
2. ম্যাথু হেইডেন (অস্ট্রেলিয়া)- ৩৮০ রান
ম্যাথিউ হেডেনের অসাধারণ ৩৮০ রানের ইনিংসটি ২০০৩ সালের ৯ অক্টোবর পার্থে জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে খেলা, যা তাকে দ্বিতীয় স্থানে নিয়ে আসে। অস্ট্রেলিয়া ৬ উইকেটে ৭৩৫ রান করে, যেখানে হেডেন ৪৩৭ বল থেকে ৩৮টি চার এবং ১১টি ছক্কা মারেন। ম্যাচটি অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসে ১৭৫ রানে জয়ে শেষ হয়।
1. ব্রায়ান লারা (ওয়েস্ট ইন্ডিজ)- ৪০০ রান
ব্রায়ান লারার ইতিহাস সৃষ্টি করা ২০০৪ সালের ১০ এপ্রিল সেন্ট জনসে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে একক টেস্ট ম্যাচে ৪০০ রান করার ঘটনা। তার অসাধারণ ইনিংসে ৫৮২ বল থেকে ৪৩টি চার এবং ৪টি ছক্কা ছিল। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৫ উইকেটে ৭৫১ রানে ইনিংস ঘোষণা করে, এবং ম্যাচটি শেষ পর্যন্ত ড্রতে শেষ হয়।