বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় খেলা ক্রিকেটে একদিনের আন্তর্জাতিক (ওডিআই) ম্যাচে কিছু অসাধারণ দলীয় প্রদর্শনী দেখা গেছে। দলগুলো তাদের ব্যাটিং দক্ষতা দেখিয়ে এমন দুর্দান্ত স্কোর করেছে যা ভক্তদের মুগ্ধ করেছে। আসুন এক নজরে দেখে নিই ওডিআই ক্রিকেটের শীর্ষ ১০ সর্বোচ্চ দলীয় রান, উদযাপন করি এই ক্রিকেট পরাশক্তিগুলোর অসাধারণ সাফল্য।
আরও পড়ুন:
10. ভারত বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা ৪০১/৩, গোয়ালিয়র-২০১০
ভারত আবারও ওডিআইতে সর্বোচ্চ দলীয় স্কোরের তালিকায় নিজেদের জায়গা করে নেয়, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৪০১ রান করে। ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা অসাধারণ দক্ষতা ও শক্তিশালী শটের মাধ্যমে দক্ষিণ আফ্রিকার বোলারদের ওপর প্রাধান্য বিস্তার করে। এই পারফরম্যান্স ভারতের শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনআপের প্রমাণ এবং ক্রিকেট ভক্তদের মুগ্ধ করে।
9. নিউজিল্যান্ড বনাম আয়ারল্যান্ড ৪০২/২, আবারডিন-২০০৮
আবার্ডিনে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ওডিআই ম্যাচে নিউজিল্যান্ড দুর্দান্ত ব্যাটিং প্রদর্শনী দেখিয়ে ৪০২ রান সংগ্রহ করে। কিউই ব্যাটসম্যানরা আক্রমণাত্মকভাবে আয়ারল্যান্ডের বোলারদের মোকাবিলা করে, সুনিপুণভাবে বাউন্ডারি ও ছক্কা হাঁকিয়ে নিজেদের দক্ষতা ও নিয়ন্ত্রণ দেখায়। এই অসাধারণ স্কোর নিউজিল্যান্ডের ওডিআই ইতিহাসে সর্বোচ্চ দলীয় রান হিসেবে রয়ে গেছে, যা তাদের ব্যাটিং সামর্থ্যকে তুলে ধরে।
8. ভারত বনাম শ্রীলঙ্কা ৪১৪/৭, রাজকোট-২০০৯
২০০৯ সালে রাজকোটে অনুষ্ঠিত একটি ওডিআই ম্যাচে ভারত শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৪১৪ রানে ৭ উইকেটে এক অসাধারণ স্কোর করে, যার পেছনে ছিল সেহওয়াগের ১৪৬, ধোনির ৭২, এবং তেন্ডুলকারের ৬৯ রান। শ্রীলঙ্কার দিলশান (১৬০) এবং সাঙ্গাকারা (৯০) এর রোমাঞ্চকর প্রচেষ্টার পরেও তারা লক্ষ্যের কাছাকাছি এসে থেমে যায়, ৮ উইকেটে ৪১১ রান করে, মাত্র তিন রানে পিছিয়ে থাকে।
7. ভারত বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৪১৮/৫, ইন্দোর-২০১১
২০১১ সালে ইন্দোরে অনুষ্ঠিত একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচে ভারত ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৫ উইকেটে ৪১৮ রান করে। সেহওয়াগ ২১৯, গম্ভীর ৬৭, এবং রায়না ৫৫ রান যোগ করেন। জবাবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২৬৫ রান করে, যেখানে রামদিন সর্বোচ্চ ৯৬ রান করেন। জাদেজা এবং রাহুল শর্মা তিনটি করে উইকেট নেন, যার ফলে ভারত ১৫৩ রানে জয় লাভ করে।
6. অস্ট্রেলিয়া বনাম আফগানিস্তান ৪১৭/৬, পার্থ-২০১৫
অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপে ইতিহাস গড়ে ৪১৭ রানে ৬ উইকেটে স্কোর করে, যেখানে ওয়ার্নার ১৭৮, স্মিথ ৯৫, এবং ম্যাক্সওয়েল ৮৮ রান করেন। আফগানিস্তান ১৪২ রানে অলআউট হয়ে যায়, জনসন ২২ রানে ৪ উইকেট নেন। এতে অস্ট্রেলিয়া ২৭৫ রানে জয় লাভ করে, যা ওডিআই ইতিহাসে দ্বিতীয় বৃহত্তম জয়।
5. অস্ট্রেলিয়া বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা ৪৩৪/৪, জোহানেসবার্গ-২০০৬
২০০৬ সালের এক স্মরণীয় ওডিআই ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৪৩৪ রানে ৪ উইকেটে স্কোর করে। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকা এক অসাধারণ প্রত্যাবর্তন করে ৯ উইকেটে ৪৩৮ রান তুলে, মাত্র এক বল বাকি থাকতে এক উইকেটে জয় ছিনিয়ে নেয়। এই অবিশ্বাস্য ম্যাচটি ওডিআই ইতিহাসের সেরা হিসেবে বিবেচিত হয়, যেখানে দুই দলের অসাধারণ দক্ষতা ও অধ্যবসায় ফুটে ওঠে।
4. শ্রীলঙ্কা বনাম নেদারল্যান্ডস ৪৪৩/৯, আমস্টেলভিন-২০০৬
২০০৬ সালে আমস্টেলভিনে অনুষ্ঠিত এক ওডিআই ম্যাচে শ্রীলঙ্কা ৯ উইকেটে ৪৪৩ রান করে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে বিশ্বরেকর্ড গড়ে। জয়াসুরিয়ার ১৫৭ ও দিলশানের অপরাজিত ১১৭ রানে শ্রীলঙ্কা এই স্কোর করে। নেদারল্যান্ডস ২৪৮ রান করে, যেখানে ডি লিডে ৫১ রান যোগ করেন। শ্রীলঙ্কা ১৯৫ রানে জয়ী হয়, যা দক্ষিণ আফ্রিকার আগের ৪৩৮ রানের রেকর্ড ভেঙে দেয়।
3. ইংল্যান্ড বনাম পাকিস্তান ৪৪৪/৩, ট্রেন্ট ব্রিজ-২০১৬
ইংল্যান্ড পাকিস্তানের বিপক্ষে ৩ উইকেটে ৪৪৪ রান করে এক অসাধারণ কৃতিত্ব অর্জন করে, যেখানে তাদের ব্যাটিং পারফরম্যান্স ছিল দৃষ্টিনন্দন। এই দাপুটে পারফরম্যান্সের ফলে তারা ১৬৯ রানে জয়ী হয় এবং ওডিআই ক্রিকেটে নতুন রেকর্ড গড়ে, যা তাদের মাঠের অসাধারণ দক্ষতা তুলে ধরে।
2. দক্ষিণ আফ্রিকা বনাম অস্ট্রেলিয়া ৪৩৮/৯, জোহানেসবার্গ-২০০৬
২০০৬ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকার অসাধারণ চেজটি সবসময় মনে রাখা হবে। তারা গিবসের ১৭৫ রানের সহায়তায় ৯ উইকেটে ৪৩৮ রান করে, অস্ট্রেলিয়ার ৪৩৪ রানের রেকর্ড ভেঙে দেয়। এই ম্যাচটি ওডিআই ইতিহাসের অন্যতম স্মরণীয়, যা দক্ষিণ আফ্রিকার চমকপ্রদ চেজ এবং ব্যাটিং দক্ষতা তুলে ধরে।
1. ইংল্যান্ড বনাম অস্ট্রেলিয়া ৪৮১/৬, ট্রেন্ট ব্রিজ-২০১৮
ইংল্যান্ড অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ৬ উইকেটে ৪৮১ রান করে ওডিআই ক্রিকেটে ইতিহাস গড়ে, যেখানে হেলস ১৪৭ এবং বেয়ারস্টো ১৩৯ রান করেন। তাদের অসাধারণ পারফরম্যান্সে ২১টি ছক্কা ও ৪১টি চার ছিল, যা ওডিআই ইতিহাসে সর্বোচ্চ দলীয় রান হিসেবে নতুন রেকর্ড স্থাপন করে এবং বিশ্বজুড়ে ক্রিকেট ভক্তদের মুগ্ধ করে।